শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর ::
বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অনেকটা নাকের ডগায় প্রকাশ্যে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন ফুলছড়ি রেঞ্জের মাষ্টার বাড়ি এরিয়াতে। ইসলামপুর কৈলশঘোনা সড়কের মাঝপথে মাষ্টার বাড়ি এরিয়া এলাকায় একটি সুউচ্চ পাহাড় কেটে ঘর নির্মানের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রভাবশালী দুই সহোদর।এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে বাড়ি-ঘর নির্মানের প্রস্তুতি নিলেও বন বিভাগ আইওয়াস অভিযান চালিয়ে দুই শ্রমিককে আটক,ডাম্পার জব্দ, মামলা দায়ের করলেও আরো বেপরোয়া হয়ে পড়ে এ দুই সহোদর। ফলে সবুজ প্রকৃতি ঘেরা এই এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটার ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শত বছরের ইসলামপুরের সৌন্দর্য বর্ধক প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী পাহাড়গুলো। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বন বিভাগের নাকের ডগায় অবাধে পাহাড় কাটার এই কাজ চললেও রহস্যজনকভাবে তারা বলছেন ঘটনার বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তৎকালীন স্থানীয় রেঞ্জ ও বিট অফিসের কতিপয় অসৎ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে উজাড় করছে পাহাড় খেকো সহোদর এই চক্রটি। ইতিমধ্যে পাহাড় কেটে সেখানে কাঁটাতারের ঘেরা দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন অফিস বাজারের পশ্চিম দিকে কৈলশঘোনা যাওয়ার মাঝপথে ২নং ওয়ার্ডে মাষ্টার এরিয়া এলাকায় বিশাল আয়তনের একটি পাহাড় কেটে সাফ করে ফেলেছে ইসলামপুর ২নং ওয়ার্ড এলাকার ইউছুপ জালালের পুত্র জহির আহমদ ও সাইফু আহমেদ নামের দুই সহোদর ।
স্থানীয় সূত্র জানায়,সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন থেকে এককানি রিজার্ভ জমি ৩৬ লক্ষ টাকায় ক্রয় করে তারা।পরে পাহাড়ের প্রবেশমুখে সিন্ডিকেটটি কাটাতাঁরের বেড়া দিয়ে গত ৭/৮ মাস ধরে প্রকাশ্য দিবালোকে ৬/৭ জন শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটার কার্যক্রম চলছে নির্বিঘ্নে।এতে অবাধে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শত বছরের ইসলামপুরের সৌন্দর্য্য বর্ধক প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী পাহাড়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরো ইউনিয়নের কিছু পাহাড়খেকো, ভূমিদস্যু ব্যক্তি তাদের ব্যক্তি স্বার্থে রিজার্ভ জমি ও পাহাড় কেটে সেখানে ঘর-বাড়ি, দোকানপাট নির্মাণ ও মাটি বিক্রি করছে। এ সিন্ডিকেটটি এসব বিক্রি করে রাতারাতি -কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তারপরও ঘুম ভাঙ্গেনা বন বিভাগের।
নাম প্রকাশ না করার মর্তে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি বলেন, শুনেছি এখানে পাহাড় কেটে একটি ঘর নির্মান করা হবে। বিশাল আয়তনের পাহাড়টি কেটে সৌন্দর্য্যহানিসহ গোটা এলাকার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো বড় ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকের ধারণা। ওই এলাকার স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
স্থানীয় লোকজন আরও জানান, বন বিভাগের লোকজন একটু আড়ালে থাকলেই শুরু হয় পাহাড়কাটার মহোৎসব। ৬/৭ জন শ্রমিক দিয়ে চলে পাহাড় কাটার কাজ। আরকান সড়কের নতুন অফিস বাজার থেকে কৈলশ ঘোনা সড়কে মাঝপথে রয়েছে ভয়াবহ পাহাড় কাটার এই চিত্র। স্থানীয়রা আরো জানায়,৬/৭ মাস পুর্বে খবর পেয়ে অভিযান চালায় স্থানীয় বন বিভাগের লোকজন।এ সময় সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির ডাম্পার জব্দ করা হলেও পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।এদিন দুই শ্রমিককে আটক করে মামলা দিলেও পাহাড় কাটায় জড়িত জহির ও সাইফুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বন বিভাগ।এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু জাকারিয়া সিবিএনকে বলেন,সম্ভবত আমি যোগদানের আগে কাটা হয়েছিল পাহাড়টি। আমি আসার পর কাটা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেব। আর্থিক লেনদেন ও ডাম্পার ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানায়।
পাঠকের মতামত: